সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আইফোন 13 Pro Max এর ফিচার, স্পেসিফিকেশন ও বাজার মুল্য

সর্বাধুনিক প্রযুক্তির আইফোন 13 Pro Max এর ফিচার, স্পেসিফিকেশন ও বাজার মুল্য

বর্তমান সময়ের আধুনিক প্রযুক্তি সম্পন্ন স্মার্টফোন গুলোর মধ্যে অ্যাপল ১৩ প্রো-ম্যাক্স অন্যতম। নতুন প্রজন্মের কাছে এই স্মার্ট ফোনটির চাহিদা যেকোনো সময়ের যে কোনো স্মার্ট ফোনের চেয়ে কয়েকগুন বেশি। আধুনিক প্রযুক্তির স্মার্ট ফোনে পাবেন সব ধরনের অভাবনীয় ফিচার। এই ফোনে এখন পর্যন্ত সবচেয়ে উন্নত প্রো-ক্যামেরা সিস্টেম, প্রো-মোশন সহ সুপার রেটিনা XDR ডিসপ্লে; দীর্ঘায়ু বিশিষ্ট ব্যাটারি উচ্চ ক্ষমতা সম্পন্ন প্রসেসর, হাইস্পিড চিপ,উন্নত ৫জি সেবা সহ আরো অনেক কিছু পাচ্ছেন।

ডিসপ্লেঃ 
৬.৭ ইঞ্চির বিশালাকৃতির সুপার রেটিনা OLED ডিসপ্লে আপনাকে দেবে ভিডিও দেখার অন্য রকম এক অভিজ্ঞতা। ওলিওফোবিক কোটিং সমৃদ্ধ ডিসপ্লে (১২২৪*২৭৭৮ পিক্সেল) যা স্ক্রিনে দাগ পড়া থেকে আপনাকে দেবে বাড়তি নিরাপত্তা। সুপার রেটিনা XDR-ডিসপ্লেতে রয়েছে P3 Colour এবং সিরামিক শিল্ড সহ অত্যাধিক পিক্সেল ঘনত্ব বিশিষ্ট OLED প্রযুক্তি। এই ডিসপ্লে ঘরের বাইরের আলোতে বাইরে প্রায় ২৫% পর্যন্ত উজ্জ্বলতা বজায় রাখে এবং ১০ হার্জ থেকে ১২০ হার্জ পর্যন্ত পরিবর্তনশীল রিফ্রেশ রেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি করে। অ্যাপল এই পরিবর্তনশীল রিফ্রেশ রেটকে প্রো-মোশন হিসাবে উল্লেখ করে এবং এটি আইফোনে অনেক নতুন কার্যকারিতা যোগ করে যা আগে সম্ভব ছিল না। উদাহরণ স্বরূপ, কন্টেন্ট দেখার সময় ডিসপ্লে তার রিফ্রেশ রেট পরিবর্তন করবে যা স্ক্রিনে আছে তার সাথে মিল রেখে। যেহেতু ডিসপ্লে তার রিফ্রেশকে ১০ হার্জ থেকে ১২০ হার্জ পর্যন্ত পরিবর্তনশীল রিফ্রেশ রেট স্বয়ংক্রিয়ভাবে তৈরি করে তাই নির্দিষ্ট কাজ সম্পাদন করার সময় ব্যাটারি ডিসচার্জের হার অনেক কম হয়।  


কালার ভেরিয়েন্টঃ 
১. Alpine Green (আলপাইন সবুজ)
২. Silver (সিলভার)
৩. Gold (গোল্ড)
৪. Graphite  (গ্রাফাইট)
৫. Sierra Blue (সিয়েরা ব্লো)




ক্যামেরাঃ
১২ মেগাপিক্সেল আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরাতে পাচ্ছেন নিখুত ছবি তোলা ও 4K ভিডিও ধারনের সুবিধা। ক্যামেরা সিস্টেম আধুনিকরণের মাধ্যমে পরবর্তী-স্তরের হার্ডওয়্যারসহ সব যন্ত্রাংশ আরো বিশেষায়িত করা হয়েছে যা অনেক বেশি বিশদ ক্যাপচার গ্রহণ করে। নতুন ছবি এবং ফিল্ম মেকিং কৌশলের জন্য সুপার ইন্টেলিজেন্ট সফটওয়্যার দেয়া হয়েছে। আর এটি এমন একটি মন-মাতানো দ্রুততম চিপ যা সব সম্ভব করে তোলে। এটি আপনার শুটিংয়ের অভিজ্ঞতাকে আরো রোমাঞ্চকর করে তোলবে। অত্যাধুনিক ডিজাইন করা লেন্স এবং শক্তিশালী অটোফোকাস সিস্টেমের সাথে নতুন আল্ট্রা ওয়াইড ক্যামেরা মাত্র ২ সেমি ফোকাস দুরত্বেও নিখুত ফোকাস করতে পারে এমনকি ক্ষুদ্রতম ছবির বিবরণকেও অসাধারণভাবে নিখুতভাবে রুপ দিতে পারে। একটি জরাজীর্ণ পাতাকে বিমূর্ত শিল্পে রূপান্তর করতে পারে এমনকি একটি শিশির বিন্দুকে বিবর্ধিত করতে পারে। আরো অনেক ক্ষুদ্র সৌন্দর্য অপেক্ষা করছে আপনার জন্য বিশেষ এই ক্যামেরায়।

   

আইফোন ১৩ প্রো-ম্যাক্স এর ক্যামেরাটি কম আলোর ছবির জন্য বিশেষভাবে তৈরি করা হয়েছে। ওয়াইড ক্যামেরা একটি বিস্তৃত অ্যাপারচার এবং এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে বড় সেন্সর যোগ করে — এবং এটি নাইট মোড পোর্ট্রেটের জন্য LiDAR স্ক্যানার ব্যবহার করে। আল্ট্রা ওয়াইড একটি বিস্তৃত অ্যাপারচার, একটি দ্রুততম সেন্সর এবং সম্পূর্ণ নতুন অটোফোকাস পায় এবং এটি ২.২ গুন বেশি আলো বিকিরণ করে রাতের ছবিতেও।



নতুন এই টেলিফোটো ক্যামেরায় ৭৭ মিলিমিটার ফোকাল দৈর্ঘ্য এবং 3x অপটিক্যাল জুম রয়েছে — ক্লাসিক প্রতিকৃতি বা দূর থেকে পরিষ্কার ছবি এবং ভিডিও তোলার জন্য দুর্দান্ত। কাছাকাছি অবজেক্টের জন্য  পোর্ট্রেট মোড ব্যবহার করলে আপনি স্টুডিও-গুণমানের আলোর প্রভাব নিয়ে নিখুত ছবি তুলতে পারবেন।

এ-১৫ বায়োনিক প্রসেসর:
A15 Bionic Processor বিশ্বের দ্রুত গতি সম্পন্ন স্মার্টফোন চিপ। এটি হাই কনফিগারেশনের গেমস, উন্নত ক্যামেরা বৈশিষ্ট্য এবং আরও অনেক কিছুর জন্য দ্রুত গ্রাফিক্স কর্মক্ষমতা প্রদান করে। বিগত কয়েক বছরে অ্যাপল তার মোবাইল চিপসেটগুলিকে ব্যাপকভাবে উন্নীত করেছে ক্ষমতা ও কার্যকারিতার নিরিখে অ্যাপল এ-১৫ বায়োনিক প্রসেসরের  প্রশংসা এখন সবার মুখে মুখে।
অ্যাপল এ-১৫ বায়োনিক চিপসেটের বেঞ্চমার্ক পয়েন্টকে তিনটি সেটে বিভক্ত করেছে। যার মধ্যে সিঙ্গেল-কোর সিপিইউ টেস্টে চিপটির সর্বাধিক স্কোর ১,৭২৪ পয়েন্ট, আবার সর্বনিম্ন স্কোর হচ্ছে ১,৫৯৯ অপরদিকে মাল্টি-কোর চিপটি সর্বাধিক ৪,৩২০ পয়েন্ট পেয়েছে, এবং মাল্টি-কোর টেস্টে,এর সর্বনিম্ন স্কোর ৩,৯৮৪ গতবছরে লঞ্চ হওয়া অ্যাপল এ-১৫ বায়োনিক প্রসেসরের কথা যদি বলি তাহলে গিকবেঞ্চে সিঙ্গেল ও মাল্টি-কোর টেস্টে এই প্রসেসরটির সর্বোচ্চ স্কোর ছিল ১,৬০৬ এবং ৪,৩০৫ পয়েন্ট। এতএব, সিঙ্গেল কোর পারফরম্যান্সের নিরিখে অ্যাপল এ-১৫ বায়োনিক চিপসেটে ৭ শতাংশ বৃদ্ধি লক্ষ্য করা যাচ্ছে। তবে মাল্টি-কোর টেস্টে চিপসেট দুটির কার্যকারিতা প্রায় সমান।




ওয়ারলেস সক্ষমতা:

5G: এটি ৫জি সপোর্টেট স্মার্টফোন আর  ৬ গিগাহার্জ এবং ৫জি মিলিমিটার ওয়েব ক্ষমতা সহ 5G নেটওয়ার্ক অনেক বেশি শক্তিশালী এবং আরো বেশি স্মুথ মোবিলিটি সেবা প্রদান করে। ৫জি মিলিমিটার ওয়েব ব্যান্ড শুধুমাত্র বড় শহরের কেন্দ্র বা স্পোর্টস স্টেডিয়ামের মতো বাছাই করা জায়গায় পাওয়া যায়। একজন ব্যবহারকারী একটি মিলিমিটার ওয়েব 5G টাওয়ারের সরাসরি গিগাবাইট ডাউনলোডের গতির সাথে যুক্ত হতে পারবেন। এমনকি জনাকীর্ণ স্থানেও নেটওয়ার্ক কনজেশনের কারণে সেই গতি উল্লেখযোগ্য হারে কমে যাবে না।

ওয়াইফাই-৬
অ্যাপল তার সর্বশেষ ডিভাইসগুলিতে ২x২ মাল্টিপল ইনপুট মাল্টিপল আউটপোট (MIMO) বা WiFi-৬ সহ ৮০২.১১ এক্স প্রযুক্তি ব্যবহার করে। এটি অত্যন্ত দক্ষ একটি মান যা কি না তারবিহীন সিগলানকে প্রায় চারগুণ শক্তিশালী করে। ওয়াইফাই-৬ রাউটার এবং উচ্চ-গতির ইন্টারনেট সংযোগের ব্যবহারকারীরা পুরানো মডেলগুলির তুলনায় উল্লেখযোগ্য গতি বৃদ্ধি লক্ষ্য করবেন৷

 ৫.০: সর্বশেষ অ্যাপলের ডিভাইসগুলি ব্লুটুথ ৫.০ সাপোর্ট করে, যা পূর্ববর্তী জেনারেশনের তুলনায় সংযোগের উন্নতি এবং অধিক পরিসীমা প্রদান করে এবং সবচেয়ে বেশি কভারেজ এরিয়া নিয়ে কাজ করে। সবচেয়ে সুবিধাজনক বিষয় হলো এটি সক্রিয় থাকার জন্য খুব কম পাওয়ার সাপ্লাইয়ের প্রয়োজন হয়। আইফোন ব্যবহারকারীদের জন্য ব্লুটুথ ৫.০ বলতে যা বোঝায় তা সহজ - দীর্ঘ দূরত্বে আরও ভাল সংযোগ। বর্তমানে ব্লুটুথ ডেটা স্থানান্তরের জন্য একটি দুর্দান্ত মাধ্যম নয়, তবে এটি অ্যাপলের এয়ারপডসের মতো ওয়্যারলেস হেডফোনগুলির সেটে মিউজিক স্ট্রিম করার জন্য দুর্দান্ত কাজ করে।

ব্যাটারিঃ
৪৩৫২ মিলিঅ্যাম্পিয়ার আওয়ার লিথিয়াম আয়নের ব্যাটারি আপনাকে দিবে ২৮ ঘন্টা ভিডিও প্লেব্যাকের সুবিধা এবং সবচেয়ে দীর্ঘ সময়ের ব্যাটারি লাইফের নিশ্চয়তা। সাথে পাচ্ছেন আধুনিক প্রযুক্তির দ্রুততম ওয়্যারলেস চাজিং এর সুবিধা।

স্টোরেজ সক্ষমতাঃ চারটি স্টোরেজ ভ্যারিয়েন্ট দিয়ে ডিভাসটিকে বাজারজাতকরণ করা হয়েছে।  ১২৮ জিবি থেকে শুরু হয়ে  যথাক্রমে ২৫৬ জিবি, ৫১২ জিবি এবং ১ টেরাবাইট স্টোরেজ সম্বলিত হ্যান্ডসেটটি পাওয়া যাচ্ছে।

ওয়াটার রেসিস্ট্যান্সঃ ওয়াটার রেসিস্ট্যান্স ফিচারটি কমপক্ষে ৩০ মিনিটের বেশি সময় ৬ মিটার গভীরতা পর্যন্ত সুরক্ষিত রাখবে।




ফেইস আইডিঃ
ফেইস আইডি প্রযুক্তিটিও বর্তমানে বেশ জনপ্রিয়। ফেস আইডি প্রযুক্তি মুলতঃ ফেসিয়াল রিকগনিশন সেন্সরের উপর ভিত্তি করে যার দুটি অংশ। একটি ডট প্রজেক্টর মডিউল যা ব্যবহারকারীর মুখে 30000 এর বেশি ডট প্রজেক্ট করে এবং একটি ইনফার্ড ক্যামেরা মডিউল প্যাটার্নটি পড়ে। প্যাটার্নটি এনক্রিপ্ট করা হয় এবং নিবন্ধিত মুখের সাথে একটি মিল নিশ্চিত করতে ডিভাইসের CPU-তে একটি স্থানীয় "সিকিউর এনক্লেভ"-এ পাঠানো হয়।

          আপনার চাহিদা অনুযায়ী সবকিছুই পাচ্ছেন প্রযুক্তি নির্ভর অ্যাপল ১৩ প্রো-ম্যাক্সে । ডাটা সংরক্ষণ ও ডাটা নিরাপত্তায় অ্যাপল এর বিকল্প নেই। আপনার ডাটা এবং গোপনীয়তা রক্ষার জন্য ফোনটিকে বিশেষভাবে ডিজাইন করা হয়েছে।

RELATED ARTICLES